1. admin@prottashanewsbd24.com : admin :
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৬ অপরাহ্ন

পাবনায় মাশরুম চাষে ব্যাপক সাফল্য।

প্রত্যাশা নিউজ ডেস্ক
  • সময় : বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
সংবাদটি শেয়ার করুন:

মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর সুস্বাদু ও ঔষধি গুণ সম্পন্ন হওয়ায় এটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাড়ছে মাশরুমের চাষ। বিশেষ করে শিক্ষিত যুবকদের মাঝে মাশরুম চাষে বেশি আগ্রহ বাড়ছে। মাশরুম চাষে বেকার সমস্যার সমাধান ও বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মাশরুম চাষে কোন আবাদি জমির প্রয়োজন হয় না। চাষের জমি না থাকলেও বসত ঘরের পাশে অব্যবহৃত জায়গা ও ঘরের বারান্দা ব্যবহার করে অধিক পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব।

বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করে নিজেকে পরিচিত করে তুলেছেন পাবনা চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা আব্দুল হালিম। নামের শিক্ষিত এক যুবক। তরুণ এই উদ্যোক্তা জানালেন,গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি জীবন শুরু করেন তিনি। করোনার কারণে চাকরি ছেড়ে গ্রামে চলে আসেন। চাকরি বা কোন ব্যবসা না থাকায় হতাশায় পড়েন। পরে মাশরুম চাষ বিষয় জানতে পেরে ঢাকা মাশরুম উন্নয়ন ইন্সটিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ শেষে স্বল্প পূঁজি নিয়ে ঔষধি ও পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ মাশরুম চাষ শুরু করেন।

তিনি জানালেন,প্রাথমিকভাবে ৫০টি স্পন প্যাকেট নিয়ে ২০২০ সালে মাশরুম চাষ শুরু করে আব্দুল হালিম। বসত ঘরের ছোট একটি জায়গা নিয়ে মাশরুম চাষের যাত্রা শুরু হয় তার। বর্তমানে আব্দুল হালিম মাশরুম চাষ করে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করছে। তিনি জানান, প্রথম স্পন প্যাকেট থেকে ২৫ হতে ৩০ দিনের মধ্যে ফলন আসে। ২ কেজির একটি স্পন প্যাকেট থেকে প্রায় ২ কেজি মাশরুম পাওয়া যায়।

সে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ কেজি মাশরুম বিক্রি করে থাকে। প্রতিকেজি কাচাঁ মাশরুম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা ও শুকানো মাশরুম ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে। সে উৎপাদিত মাশরুম ঢাকা,চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করছেন। এছাড়াও কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাশরুম পাঠিয়ে থাকেন বলে তিনি জানান। তার খামারে মাশরুম চাষে প্রতিদিন চারজন শ্রমিক কাজ করছে।

তাদের প্রতি মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দিয়ে থাকেন। ভবিষ্যতে আরও বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন। বর্তমানে হালিমের খামারে এক হাজারের অধিক মাশরুমের খড়ের স্পন প্যাকেট রয়েছে এ থেকে তিনি প্রায় ৫০০ কেজি মাশরুম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক প্রায় দুই লক্ষ টাকা।

মাশরুমচাষে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সম্ভাবনা দেখছেন
শিক্ষিত তরুন আব্দুল হালিম। মাশরুম চাষ করে খুব অল্প সময়ে সফলতা পেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন,মাশরুমচাষ করে আমার ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী। বেকার যুবকদের ঘরে বসে না থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বল্প পুঁজি দিয়ে মাশরুম চাষের আহ্বান জানান তিনি।

তরুণ উদ্যোক্তা হালিম আরো বলেন,মাশরুম উৎপাদনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম বীজ (স্পন) উৎপাদন করেন তিনি। তার উৎপাদিত মাশরুম বীজ (স্পন) দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে। মাশরুম খুবই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি এবং লাভজনক ব্যবসা। তার মাশরুম চাষ দেখে এলাকায় অনেক বেকার যুবক আগ্রহী হচ্ছে এ পেশায়। তার মাশরুম খামার দেখে অনেকে তার খামারের বীজ নিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেছে। হালিম বলেন,সরকারিভাবে এই খাতে যদি কৃষি ঋণ কিংবা সরকারি সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে শিক্ষিত বেকার যুবকরা মাশরুম চাষ করে বেকারত্ব দূর করতে পারবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, মানব দেহের জন্য খুবই উপকারি ও ঔষধিগুণে ভরপুর একটি দ্রব্যের সহজ সরল নাম মাশরুম। মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও ঔষধিগুণ সম্পন্ন খাবারের পাশাপাশি মাশরুম চাষ অনেক লাভজনক।

মাশরুম একটি সম্ভবনাময় ফসল। এদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাশরুম চাষের উপযোগী। মাশরুম চাষের জন্য কোন উর্বর জমির প্রয়োজন হয় না। বসত ঘরের পাশে অব্যবহৃত জায়গা ও ঘরের বারান্দা ব্যবহার করে অধিক পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন করা সম্ভব। উপজেলায় বাণিজ্যিক ও ব্যক্তি উদ্যোগে ১২ টি পয়েন্টে মাশরুম চাষ হচ্ছে। তা থেকে প্রায় দুই মেট্টিকটন মাশরুম উৎপাদিত হচ্ছে।


সংবাদটি শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও সংবাদ

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব  সংরক্ষিত © প্রত্যাশা নিউজ বিডি ২৪ © ২০২১
Theme Customized BY Theme Park BD