পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। দেশটির বিজ্ঞানমন্ত্রী খয়েরি জামালউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খবর রয়টার্সের।
খয়েরি নিজের ইনস্টগ্রামে এক বার্তায় জানান, প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিনকে জাতীয় প্রাসাদে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে মুহিউদ্দিনের কার্যালয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি। দেশটির ইতিহাসে স্বল্প সময়ের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন তিনি। মুহিউদ্দিনের পদত্যাগে পরবর্তী সরকার কে গঠন করবেন, তা এখন পযন্ত স্পষ্ট নয়। কারণ কোনও আইনপ্রণেতারই পার্লামেন্টে সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। আবার করোনা মহামারির মধ্যে মালয়েশিয়ায় নতুন করে নির্বাচন হবে কিনা, তাও পরিষ্কার নয়। পরবর্তী দায়িত্ব কে পতে যাচ্ছেন, তা নির্ভর করছে দেশটির রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর।
২০২০ সালে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট দেওয়ান রাকাইয়েতের সদস্যদের ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। তবে তার পক্ষে ও বিপক্ষে পড়া ভোটের ব্যবধান অল্প থাকায় নিজের পদ ধরে রাখতে চাপের মুখে ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি তার দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা ক্ষমতাসীন জোট সরকারের অন্যতম শরিক ও মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (ইউএমএনও) যোগ দেওয়ার পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। এছাড়া মহামারি মোকাবিলায় ব্যর্থতা, স্বেচ্ছাচারিতা, মহামারি পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক নির্দেশনা দিতে না পারা এবং অযৌক্তিকভাবে রাজাকে দেশজুড়ে জরুেরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে। ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যে অন্তদ্বন্দ্বের জেরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন মুহিউদ্দিন।
গত জুলাই মাসের শেষ দিকে তার পদত্যাগের দাবিতে মালয়েশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। আন্দোলনের মুখে গত ৪ আগস্ট টেলিভিশন ভাষণে মুহিউদ্দিন ঘোষণা করেন, পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত কিনা তা যাচাই করতে আগামী সেপ্টেম্বরে দেওয়ান রাকাইয়াতে আস্থাভোট চান তিনি।এ পরিস্থিতিতেই সোমবার পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে পদত্যাগ করেন মুহিউদ্দিন।